বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

ধরাছোঁয়ার বাইরে সোনাতলা উপজেলার মাদক কারবারি "সৈকত"


২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯:৪৯ অপরাহ্ণ 

ধরাছোঁয়ার বাইরে সোনাতলা উপজেলার মাদক কারবারি "সৈকত"

মাদক কারবারি সৈকত (৪০) | ছবি: সংগৃহীত

  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

মাদকে সয়লাব বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা। র‌্যাব, পুলিশ ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযান সত্বেও থেমে নেই মাদকের কারবার। দিন দিন মাদক কারবারি ও মাদক সেবীর সংখ্যা বাড়ছে। শহর ছেড়ে এখন গ্রামে-গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে মাদকের কারবার। হাত বাড়ালেই মিলছে নানা ধরণের মাদকদ্রব্য। কোনভাবেই থামছে না মাদকের আগ্রাসন। প্রতিবছর মাদক বিরোধী দিবস পালন করা হয় দেশের প্রতিটি জেলায় কিন্তু এতে কোন রকম প্রতিকার মিলছে না বলে জানিয়েছেন সমাজ সচেতন নাগরিক সমাজ।

রবিবার ২ ফেব্রুয়ারী এক অনুসন্ধানে জানা গেছে,  শুধু বগুড়া সোনাতলা উপজেলাতেই ৩০-৪০টি মাদকের স্পট রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম একটি স্পট হলো সৈয়দ আহম্মেদ কলেজ। সেখানে অনুসন্ধানে সৈকত (৪০) নামের এক মাদক কারবারির কথা উঠে আসে। সে এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী। দীঘ সময় ধরে বীরদপে মাদক ব্যবসা করে আসছে সৈকত। তার বাড়ি সুখানপুকুর লাঠিগঞ্জ এলাকায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে ছিনতাই, মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও সোনাতলা উপজেলার স্বরধনকুটি এলাকার স্মরন (২৪), তেলিহাটা এলাকার রিপন (৩৬), মহিচরন এলাকার  মোশারফ (৩০) চিহ্নিত ভ্রাম্যমান মাদক বিক্রেতা।

সোনাতলা উপজেলার "সৈয়দ আহম্মেদ কলেজ" এলাকা- গাবতলী উপজেলার শেষ এবং সোনাতলা উপজেলার শুরু হওয়ার কারনে মাদক কারবারীরা এ এলাকাকে মাদক সেবনের নিরাপদ অভরারন্য হিসাবে বেঁচে নিয়েছে। দুটি উপজেলার মাঝামাঝি হওয়ার কারনে প্রশাসনের নজর একেবারেই খুব কম পড়ে। যে কারনে মাদক কারবারি এবং মাদকসেবীদের জন্য এটি একটি নিরাপদ বিচরণ ভুমি হিসেবে দিন দিন গুরুত্ব পাচ্ছে।    

সম্প্রতি এক অসহায় পিতা প্রবাস থেকে তার ছেলেকে মাদকের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য ফেসবুকে আকুতি জানান। তিনি লিখেন “আমি একজন প্রবাসী, আমি বাড়িতে না থাকার কারণে আমার ছেলে বিভিন্ন রকম নেশার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে, পরিবারের কারো কোনো কথা মূল্যায়ন করে না, আমি আপনাকে রিকোয়েস্ট করব, দয়া করে আপনার নিজের দায়িত্ববোধ থেকে মাঝে মাঝে ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে সতর্ক করার জন্য। এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। একজন অসহায় পিতা হিসেবে আপনার কাছে সাহায্য চাচ্ছি। আপনার ২/১ দিনের অভিযানে হয়তো আমার ছেলে সহ এলাকার কিশোররা মাদক গ্রহণ করতে ভয় পাবে।” সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন অভিব্যাক্তি প্রকাশ করেছেন একজন অসহায় বাবা।

উল্লেখ্য যে , এখন স্পট কেন্দ্রিক মাদক কারবারের পাশাপাশি অনলাইনেও মাদক কেনা-বেচা চলছে। অনলাইনে অর্ডার করলে মূহুর্তেই ক্রেতার দোড়গোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে ইয়াবা, ফেনসিডিল,গাঁজা ও মদসহ সব ধরণের মাদক। আবার অনেক মাদক বিক্রেতা মোটর সাইকেলে চেপে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় মাদক সরবরাহ করছে খুব সহজে। তবে বগুড়ায় মাদক সেবীর সংখ্যা কত তার পরিসংখ্যান মাদক নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর বা পুলিশের কাছে নেই। মাদক নিয়ন্ত্রণ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বগুড়ার তথ্য মতে, বগুড়া জেলায় মাদক সেবীর সংখ্যা ৫০ হাজারেরও বেশি হতে পারে। এর মধ্যে মাাদক সেবীদের একটি বড় অংশ শহরে বাস করে। তাছাড়া তাদের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারির সংখ্যা ২ শতাধিক।  

আরও জানা যায়,স্পটে মাঝে মধ্যে পুলিশ আসে- যায় কিন্তু মাদক ব্যবসা কখনই থেমে নেই। এ বিষয়ে সোনাতলা থানার অফিসার ইনর্চাজ কে একাধিকবার কল দিলেও তিনি কথা না বলে ফোন কেটে দেন।

এলাকাবাসীর দাবী সোনাতলা উপজেলার চিহ্নিত মাদক কারবারি সৈকত (৪০) সহ অন্যান্য মাদক কারবারিদের শাস্তির আওতায় আনার জন্য।  কেননা মাদকের ভয়াল থাবা শিক্ষিত শিশু- কিশোরদের জীবন ধ্বংষ করে দিচ্ছে। তাই ভয়াবহ এই মাদকের হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তাঁরা।